দৌলতখানে বুলবুলের আঘাতে কৃষকদের মাথায় হাত

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে ভারি বৃষ্টিতে ভোলার দৌলতখান উপজেলায় অনেক রবি শস্যের মাঠ পানিতে ডুবে গেছে। এতে উপকূল এলাকার কৃষকদের ৬ হাজার ২৬০ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

গতকাল রোববার ফসলি জমির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে জানতে বেশ কয়েকজন স্থানীয় কৃষকের সঙ্গে কথা বলেন দৈনিক ভোলার বাণীর এই প্রতিনিধি।

রুহুল আমিন নামে একজন কৃষক জানান, ২০ হেক্টর জমিতে কয়েক লাখ টাকা ব্যয় করে ২০ দিন আগে বাধাকপি, ফুলকপি, মরিচ, টমেটো, ধান, করলা ও বেগুন চাষ করেছে। কিন্তু গত তিন দিনের ঘূর্ণিঝড় বুলুবুল-এর প্রভাবে বৃষ্টির পানিতে এসব জামি প্লাবিত হয়ে গেছে। এতে জমির সবজি প্রায় নষ্টের পথে।

পাশের জমিতে চাষ করা কৃষক নবু মিয়াও জানান,বৃষ্টির পানিতে জমির ধান প্লাবিত হওয়ার কথা। তিনি জানান, শনিবার সেচ ও বাঁধ দিয়ে অনেক ফসল কোনোমতে রক্ষা করা সম্ভব হলেও গতকালের বৃষ্টিতে সেগুলোও পানির নিচে তলিয়ে যায়। ফলে তার মতো অনেক কৃষকই দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

কৃষক সফিক মিয়া জানান, তিনি ৫ লাখ টাকা ঋণ করে প্রায় ২০ হেক্টর জমিতে মরিচ, লাউ, মুলা ও সিম চাষ করেছেন। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় হওয়ায় প্রথম দিনের বৃষ্টির পানি প্রবেশ করে আংশিক ক্ষতি হলেও পরের দুই দিনের বৃষ্টিতে পুরো ফসলের মাঠ পানিতে ডুবে গেছে।

ওই এলাকার কৃষক খালেক, নবু, হাসেম, লিটন, ইউসুফ আলী, জুনাব আলীসহ অনেকেরই ফসলের ক্ষেত পানিতে ডুবে গেছে। এর ফলে কৃষকরা কী করবেন তার কুলকিনারা করতে পারছেন না।

কৃষকেদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে তারা জানান, দৌলতখান উপজেলায় ৩০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়ে যেতে পারে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, তিন দিনের ঘূর্ণিঝড় বুলবুল-এর টানা বৃষ্টিতে মাঠের পর মাঠের রবি শস্য পানিতে ডুবে রয়েছে। পানি সরানোর কোনো ব্যবস্থা না থাকায় মাঠজুড়েই শুধু চোখে পড়ছে পানি আর পানি।

দৌলতখান উপজেলা কৃষি উপসহকারী সুহাদ জানান, ক্ষতির চিত্র কৃষি বিভাগের হাতে ইতিমধ্যে এসে পৌঁছেছে। এতে ধান ৬ হাজার হেক্টর, সবজি ২০০ হেক্টর, খেসারী ৫০ হেক্টর ও পান ১০ হেক্টরসহ প্রায় ৬ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে ফসল ক্ষতি হয়েছে।

তবে বৃষ্টির পানি দ্রুত নেমে গেলে ফসলের ক্ষতি কিছুটা কম হবে। আর সরকারি সহায়তা না পেলে ক্ষতি পুষিয়ে উঠা সম্ভব হবে না বলেও জানান কৃষি বিভাগের এই কর্মকর্তা।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।