নিরাপদ আশ্রয়ে এসেছে ভোলার ৩ লাখ ২৩ হাজার ৬শ’ ৩৭ জন মানুষ
ক্রমেই ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’। উত্তাল হয়ে উঠেছে ভোলার নদ-নদী। বুলবুলের প্রভাবে শুরু হয়েছে ঝড়ো বাতাস। শনিবার (০৯ নভেম্বর) বিকেল থেকেই বাতাসের গতিবেগ বাড়ছে এবং কখনো থেমে থেমে বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাস বইছে। এতে উপকূলের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এদিকে, রাত ১১টা পর্যন্ত জেলায় ৩ লাখ ২৩ হাজার ৬শ’ ৩৭ জনকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়েছে। জেলার জনবসতিপূর্ণ ৪৩টি চরের বাসিন্দাদের আশ্রয় কেন্দ্রে আনার কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মাসুদ আলম ছিদ্দিক।
তিনি বলেন, আমরা জেলার ৭ উপজেলার দুর্গম চরের আড়াই লাখ মানুষকে ঝূঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছি, তাদের সবাইকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনা সম্ভব হয়েছে। এছাড়াও নদীর উপকূলবর্তী এলাকার লোকজনকেও আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়েছে। জেলার ৬৬৮টি আশ্রয় কেন্দ্র ও ৩৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিরাপদে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের মধ্যে সদর উপজেলায় রয়েছে ৪৬ হাজার ২৬০, দৌলতখান উপজেলায় ৩৫ হাজার ৪২০, বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ৩৩ হাজার ৩২০, লালমোহন উপজেলায় ৪৮ হাজার ৩৯০, তজুমদ্দিন উপজেলায় ৫৪ হাজার ২১৫, চরফ্যাশনে ৬৫ হাজার ৩১০ এবং মনপুরা উপজেলায় ৪০ হাজার ৭৩২ জন রয়েছে।
সদর উপজেলার ইলিশা মৌলভীরহাট আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করা কবিতা, মাজেদ ও শান্তনাসহ অনেকেই জানান, সতর্কতা সংকেত পাওয়ার পর আমরা পরিবারের সবাইকে নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে এসেছি, দুপুরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। এসময় জেলা প্রশাসক মাসুদ আলম সিদ্দিক সবাইকে সর্তক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন এবং যতদিন আবহাওয়া অফিস ভালো খবর না দিবে ততদিন পর্যন্ত আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা মানুষদের সরকারী ভাবে খাবার সামগ্রীসহ সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। এসময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার উপ পরিচালক মাহমুদুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল হোসেন, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল হোসেন বিপ্লব, সহকারী কমিশনার ভূমি কাওসার হোসেন, ফায়ার সার্ভিস এর উপ পরিচালক জাকির হোসেন, রেড ক্রিসেন্টের সভাপতি আজিজুল ইসলাম, ইলিশা ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যান হাছনাঈন আহমেদ হাসান মিয়া, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মিয়া সিরাজ প্রমুখ।
জেলা ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) উপ-পরিচালক সাহাবুদ্দিন মিয়া বলেন, সিপিবি’র ৬৮০টি ইউনিটে তিনটি করে সংকেত পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। প্রত্যেকটি ইউনিটের আওতায় ২ থেকে ৩ হাজার মানুষের বসবাস। উপকূলজুড়ে সাধারণ জনগণকে আশ্রয় কেন্দ্রে আসার জন্য হ্যান্ড সাইরেন ও মেগা ফোনের মাধ্যমে আহ্বান জানানো হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন মসজিদের মাইকেও প্রচার চালানো হচ্ছে নিরাপদে থাকার জন্য। গত রাত থেকেই মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছে।