নামাজরত অবস্থায় অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর লাশ, স্বামী আটক
সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলায় নামাজরত অবস্থায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের নাম মায়া বেগম (২৫)।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার তাজপুর ইউপির কাদিপুর গ্রামে স্বামীর বসতঘর থেকে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত মায়া বেগম উপজেলার কাদিপুর গ্রামের সজ্জাদ মিয়ার(৩৫) স্ত্রী ও জগন্নাথপুর উপজেলার জয়দা গ্রামের আনা মিয়ার মেয়ে।
এদিকে এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত মায়া বেগমের স্বামী উপজেলার তাজপুর ইউপির কাদিপুর গ্রামের সজ্জাদ মিয়া ও তার বাবা নজির মিয়াকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
নিহত গৃহবধূর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সকালে স্বামীর বাড়ি থেকে ফোনে মায়ার নিহতের খবর জানানো হয়।
পরে স্বজনরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মায়া বেগমের নিথর দেহ মাটিতে নামাজরত অবস্থায় ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস দেয়া দেখতে পেয়ে পুলিশকে জানানো হয়। পরে পুলিশ এসে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত মায়া বেগমের মামা কালাম মিয়া অভিযোগ করে বলেন, আমার ভাগ্নিকে যৌতুকের জন্য তার স্বামী সজ্জাদ মিয়াসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন হত্যা করে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছে।
মায়ার মরদেহ নামাজরত অবস্থার মত গলায় রশি ঝুলানো দেখেছি আমরা। আমার ভাগ্নির ৫ বছরের এক কন্যাসন্তান রয়েছে এবং ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। যৌতুকের জন্য মায়ার শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে নির্যাতন করতেন।
গত কয়েক দিন আগে তার স্বামীকে আমরা চারটি গরু দিয়েছি। ভাগ্নিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
তাজপুর ইউপির স্থানীয় ওয়ার্ড ইউপি সদস্য নেরুর মিয়া বলেন, ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যা পুলিশ সঠিকভাবে বলতে পারবে। তবে নিহত মায়া বেগমের ঝুলন্ত মরদেহ মাটিরভরে নামাজরত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
ওসমানীনগর থানার এসআই শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যা ময়নাতদন্ত রিপোর্ট না পাওয়ায় বিস্তারিত তদন্ত ছাড়া বলা সম্ভব নয়। জিজ্ঞাসাবদের জন্য নিহতের স্বামী ও শ্বশুরকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
ওসমানীনগর থানার নবাগত ওসি রাশেদ মোবারক বলেন, অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছেন। গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দিলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান ওসি।