বোরহানউদ্দিনে বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৪ পালিত, সম্মাননা পেলেন ৫ জয়িতা
ভয় শব্দটি আমার ডিকশনারিতে নেই
কে যে কখন ধরা পড়ে তার ঠিক নেই : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ক্যাসিনো ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে জড়িত এটা ঠিক না। এটা বোর্ডের বিষয় না। ক্যাসিনোতে যিনি ছিলেন, তিনি ধরা পড়েছেন। কাজেই কখন যে কে কিসে ধরা পড়ে তার ঠিক নেই। কারাগারে থাকা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়াকে ইঙ্গিত করে করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে সদ্য সমাপ্ত ১৮তম জোট নিরপেক্ষ সম্মেলন (ন্যাম) নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে গণভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকরা এত খবর রাখেন অথচ ক্যাসিনো জানেন না কেনো। এতদিন ধরে কোনো একটা গণমাধ্যম এমন নিউজ দিতে পারলো না। সাংবাদিকদের কেউ একটা নিউজ করেনি ক্যাসিনো নিয়ে। কেউ করেনি। আমি এটা ধরেছি। এর জবাব কি সাংবাদিকরা জাতির কাছে দিতে পারবেন ? এমন একটা ঘটনা ঘটে যাচ্ছে কেউ কিছু বললেন না। শেখ হাসিনা বলেন, ‘মানুষ যখন অপরাধের সঙ্গে জড়ায় হয়তো প্রথম কেউ জানে না। কিন্তু একপর্যায়ে থাকে ধরা পড়তেই হবে। কখন কে কোন অপরাধে ধরা পড়ে তার কোনো ঠিক নেই। আমরা চাচ্ছি দেশের মানুষ শান্তিতে থাকুক। আর সেটাই করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, ভয় শব্দটি আমার ডিকশনারিতে নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ভয় পেলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান হতো না। আমার সঙ্গে সব সময় বৈরী আচরণ করা হয়েছে। আমি উজানে নাও ঠেলে ঠেলে রাজনীতি করেছি, সরকারে এসেছি। তিনি বলেন, আমি যখন বাংলার মাটিতে পা রেখেছি তখন থেকেই আমি যানি যে, আমাকে রাজনৈতিকভাবে হত্যা করা হতে পারে। কারণ পঁচাত্তরে আমার বাবা-মা, ভাইকে হত্যা করেছে যারা- সেই ষড়যন্ত্রকারীরাই আমাকে রাজনৈতিকভাবে হত্যা করতে পারে।
মেননকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললে ১৪ দলীয় জোটের ওই নেতাও বিতর্কিত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, আমাদের জোটের নেতা প্রশ্ন তুলেছেন, তার মনে তো কষ্ট থাকতেই পারে। তিনি নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললে, তিনিও তো বিতর্কিত হয়ে যান। এ বিষয়ে জোটের মুখপাত্র নাসিম সাহেব আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। তবে আমি বলেছি, এ বিষয়ে আমার কোনও বক্তব্য নেই। সম্প্রতি বরিশালে ওয়ার্কার্স পার্টির এক অনুষ্ঠানে একাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি বলে মন্তব্য করেন দলটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।
এই মন্তব্যের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, জনগণ যদি ভোট না দিত, আমাদের পক্ষে না থাকতো, তাহলে আমাদের সমর্থন থাকতো না। ‘তাদের (বিএনপি) ভোটবিহীন নির্বাচনের বিরুদ্ধে আমরা গণআন্দোলন গড়ে তুলতে পেরেছিলাম। আমাদের জনসমর্থন ছিল। এবারের নির্বাচনের পর জনগণ, ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের মানুষ আমাদের সমর্থন দিয়েছেন। শুধু আওয়ামী লীগের না, বিএনপির ব্যবসায়ীরাও আমাদের সমর্থন দিয়েছেন। কারণ আমরা সবার কাজ করার সুযোগ করে দিতে পেরেছি,’ বললেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলন থেকে তিনি (রাশেদ খান মেনন) এমন আচরণ করছেন। স্বাধীনতার আগে বলেছেন ভোটের বাক্সে লাথি মারো বাংলাদেশ স্বাধীন করো, পরে ইন্দিরা-মুজিব আমলে স্থল সীমানা চুক্তির সময় বলেছেন বেলুবাড়ি বেচে দিলো, এমন কথা তিনি অনেক বলেছেন। ‘এসবের পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ দল বসেছে, তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এমন বক্তব্য তিনি হয়তো আরও দেবেন, এতে আমার কোনও মন্তব্য নেই।
ক্রিকেট খেলোয়াড়দের ধর্মঘটের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্লেয়াররা হঠাৎ ধর্মঘট ডাকলো। তারা তাদের দাবি বিসিবিকে জানাতে পারতো। সেটা তারা করেনি। যাই হোক, পরবর্তীতে বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সেটা এখন মিটমাট হয়ে গেছে। আমরা যেভাবে খেলোয়াড়দের সাপোর্ট দেই। এটা হয়তো অন্য কোনো দেশ করে না।
সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব গোপন করার অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিসিবি সব সময় সাকিবের সঙ্গে আছে। সব ধরনের সহযোগিতা তাকে দেওয়া হবে। তবে ওর উচিত ছিল ফিক্সিংয়ের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা। কিন্তু সে তা করেনি। গোপন না করে সেটা আইসিসিকে তার জানানো উচিৎ ছিল। সে এটা ভুল করেছে। শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী এবারের ন্যাম সম্মেলনে তার অভিজ্ঞতার কথা সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।