সর্বশেষঃ

৬ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের

মনপুরায় ছাত্রলীগ নেতা কর্তৃক গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় জেলা ব্যাপি তোলপাড়

(অভিযুক্ত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা)

ভোলার মনপুরায় নির্জন চরপিয়ালে ৪ ধর্ষককে তাড়িয়ে দিয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় জেলা ব্যাপি তোলপাড় শুরু হয়েছে। তবে ঘটনার ২৪ ঘন্টা অতিবাহিত হওয়ার পরও রোববার বিকেল পর্যন্ত পুলিশ কোন আসামীকে গ্রেফতার করতে না পারায় এলাকায় ক্ষোভ বিরাজ করছে। পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার সাংবাদিকদের জানান, আসামীদের গ্রেফতারের জন্য জোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মনপুরা থানা পুলিশ আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করেছে।
এদিকে পুলিশ হেফাজতে রোববার দুপুর দেড় টায় লঞ্চযোগে ধর্ষিতা ওই গৃহবধূকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল পাঠানো হয়। অপরদিকে শনিবার রাতে ৬ জনকে আসামী করে থানায় মামলা করেছে ওই গৃহবধূ। যার মামলা নং-১১ তারিখ- ২৬/১০/১৯ ইং।
ধর্ষণের অভিযোগে যে ৬ জনকে আসামী করে মামলা করা হয়েছে তারা হলেন, উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম (৩০), মোঃ বেল্লাল পাটোয়ারী (৩৫), মোঃ রাসেদ পালোয়ান (২৫), মোঃ শাহীন খান (২২), মোঃ কিরন (২৬) ও ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগে স্পীডবোট চালক রিয়াজকে আসামী করা হয়। এদের সবার বাড়ি দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের রহমানপুর গ্রামের ৭ নং ওয়ার্ডে।
এদিকে ধর্ষণ মামলার অভিযুক্ত আসামী সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি নজরুল মুঠোফোনে জানান, তিনি গৃহবধূকে ধর্ষণ করেননি। তবে ওই চারজন ধর্ষণ করেছে। ধর্ষণকারী ওই চারজনকে মারধর করেছেন। তাদের কাছ থেকে স্পীডবোটের ভাড়া বাবদ ৩ হাজার টাকা নিয়ে গৃহবধূকে ১ হাজার টাকা দেওয়ার কথা স্বীকার করেন নজরুল।
মামলার এজাহারে বাদী ধর্ষিতা গৃহবধূ জানান, শনিবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় বাবার বাড়ি থেকে আড়াই বছরের সন্তানকে নিয়ে মনপুরা যাওয়ার জন্য চরফ্যাসনের বেতুয়া লঞ্চ ঘাটে আসেন। ঘাটে এসে দেখে লঞ্চ ছেড়ে চলে গেছে। পরে স্পীডবোট চড়েন। বোটে দুইজন পুরুষ যাত্রী ছিলেন। পথিমধ্যে খালপাড় থেকে আরো দুইজন যাত্রী উঠেন। একপর্যায়ে ৪ যাত্রী স্পীডবোটটি জোরপূর্বক নির্জন চরপিয়াল নিয়ে যায়। পরে গৃহবধূকে চরে নিয়ে বাগানের মধ্যে গণধর্ষণ করে ওই চার যাত্রী। পরে স্পীডবোট চালক রিয়াজ স্পীডবোটটি চালিয়ে জনতা ঘাটে এসে মালিক ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নজরুলকে জানায়। সাবেক সভাপতি একই স্পীডবোট করে চরপিয়াল যান। ওই সময় নজরুল ৪ ধর্ষণকারীকে মারধর করে ৩ হাজার টাকা নিয়ে তাড়িয়ে দেয়। পরে নজরুল ওই গৃহবধূকে চরের ভেতরে ধর্ষণ করে। পরে গৃহবধূকে ১ হাজার টাকা দিয়ে নিজের কাছে দুই হাজার টাকা রাখেন নজরুল। বাদী এজাহারে আরো জানান, নজরুল ধর্ষনের ঘটনাটি ভিডিও করেন। ধর্ষণে তার নাম না বলার জন্য হুমকী দেন। বললে ফেইসবুকে ওই ভিডিও ছেড়ে দেবে বলে হুমকী দেন।
এই ব্যাপারে মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাখাওয়াত হোসেন জানান, চরপিয়ালে গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় ৬ জনকে আসামী করে রাতে থানায় মামলা করেছে ওই গৃহবধূ। আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান চলছে। ধর্ষণ কাজে ব্যবহৃত একটি স্পীডবোট জব্দ করা হয়েছে।

 

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।