আমি অপহৃত হইনি; আমাকে র্যাব নিয়ে গিয়েছিলো : শুভর ভগ্নিপতি বিধান মজুমদার
বিপ্লব চন্দ্র বৈদ্য শুভর নিখোঁজ হওয়া ভগ্নিপতি বিধান মজুমদার ও তার দোকানের কর্মচারীর খোঁজ মিলেছে। নিখোঁজ হওয়া বিধান মজুমদার বলেন আমি অপহৃত হয়নি আমাকে র্যাব জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়েছিলো।
বুধবার সকালে বিনয় ভূষণ মজুমদার বিধান মজুমদারের বাবা জানান, ছেলে ও তার কর্মচারীকে পেয়েছেন। তিনি বলেন মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টায় র্যাব আমার পরিবারের সদস্যদের কাছে ছেলে ও কর্মচারীকে পৌঁছে দিয়েছে। বুধবার দুলারহাট থানার ওসি মিজানুর রহমান পাটোয়ারি বিপ্লব চন্দ্র বৈদ্য শুভর নিখোঁজ হওয়া ভগ্নিপতির বিধান মজুমদার ও তার দোকানের কর্মচারীকে র্যাব তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে পৌঁছে দিয়েছে এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
বিধান মজুমদার বলেন, সোমবার ২১ অক্টোবর দুলারহাট রৌদের হাটে আমার দোকান ‘মা জুয়েলার্স’ থেকে সন্ধ্যায় র্যাবের ৪/৫ জন সিভিলে এসে চোখ বেধে আমাকে ও কর্মচারী সাগরকে তাদের গাড়িতে উঠায়। চোখ খুললে আমি দেখতে পাই আমি একটি রুমে আছি। তাদের দেখে বুঝলাম আমি র্যাবের কোন অফিসে আছি। তারা আমাকে আমার সালা শুভর ফেসবুক হ্যাকিং এর বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তারা আমাকে প্রশ্ন করেন, আমি হ্যাকিং এর বিষয়ে কিছু জানি কিনা। তারা আমার ও আমার কর্মচারীর মোবাইল নিয়ে চেক করেন ফেসবুক হ্যাকিং এর সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তারা আমাকে আমার পরিবারের কাছে পৌছে দেন। র্যাব আমাকে শুধু জিজ্ঞাসাবাদে করেছিল তারা আমাকে কোন টর্চার বা গায়ে হাত দেয়নি।
উল্লেখ্য, শুভর ফেইসবুক আইডি ‘হ্যাক করে অবমাননাকর’ বক্তব্য ছড়ানোর পর ‘মুসলিম তাওহিদী জনতা’র ব্যানারে রোববার ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলা শহরে সমাবেশ ডাকা হয়। সেখান থেকে পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে জড়ায় কয়েকশ মানুষ। দফায় দফায় সংঘর্ষে এক মাদ্রাসাছাত্রসহ চারজন নিহত হন; আহত হন ১০ পুলিশসহ শতাধিক।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আর ফেইসবুক আইডি হ্যাকের জন্য জিডি করতে গিয়ে হেফাজতে থাকা শুভকেও গেপ্তার দেখানো হয় রোববারের সংঘর্ষের পর ধর্মভিত্তিক কয়েকটি সংগঠন মিলে গঠিত মুসলিম ঐক্য পরিষদের দাবির মুখে। শুভর ভগ্নিপতি বিধান মজুমদার (৩৫) ও তার দোকানের কর্মচারী সাগর (১৮) নিখোঁজ রয়েছেন বলে জেলার দুলারহাট থানায় মঙ্গলবার দুপুরে জিডি করেন বিধানের বাবা বিনয় ভূষণ মজুমদার। তাদের আটকের বিষয়ে কিছু জানে না বলে স্থানীয় পুলিশ ভাষ্য দেয়। তবে ওই বাজারের কয়েকজন দোকানির বরাতে বিধানের বাবা বিনয় ভূষণ বলেছিলেন, বিধান ও সাগরকে সিভিল পোশাকধারী সাত-আটজন লোক ডিবি পরিচয় দিয়ে কালো একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে গেছে।
অন্যদিকে ওই বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ীর বরাতে স্থানীয় আবুবকরপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন জমাদার জানিয়েছিলেন, ‘র্যাব ও ডিবি পরিচয়ে কয়েকজন লোক বিধানকে গাড়িতে তোলেন। এ সময় কয়েকজন ব্যবসায়ী বিধানকে কী কারণে আটক করা হয়েছে জানতে চাইলে তারা বলেন, তাদের বোরহানউদ্দিনের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হচ্ছে।