সর্বশেষঃ

মোংলায় ভূমি অফিসের পিয়নের বিরুদ্ধে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ

চাকরীর প্রলোভন দিয়ে নারী ধর্ষণ আর নানা অজুহাত দেখিয়ে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে মানুষদের জিম্মি করে টাকা আদায় করার অভিযোগ উঠেছে মোংলা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর দপ্তরের অফিস সহায়ক মোঃ ওসমানের বিরুদ্ধে। তার ওইসব অপকর্মের প্রতিবাদ করায় সহকর্মী আর অফিস সহকারীকে মারধর আর অপমান করার অভিযোগ রয়েছে। মোংলায় দীর্ঘ তিন বছরের অধিক সময়ে কর্মরত অবস্থায় নানা অপকর্মের অভিযোগ থাকলেও তার বিরুদ্ধে নেয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা।

জানা গেছে,গত ৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় মোংলা উপজেলার আবাসিক ভবনে এক নারীসহ স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়েন অফিস সহায়ক ওসমান। এর পর দফা রফা করে সেখান থেকে ছাড়া পায় সে। পরে ওই নারী জানান, চাকরীর প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ভোগ করেন ওসমান। মোংলার কুমারখালী এলাকার বাসিন্দা ধর্ষিতা ওই নারী বলেন, মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে তিনি,পরিবারের অভাব অনটনের কারনে তার কাছে চাকুরীর জন্য ঘুরছেন। তার অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তাকে ভোগ করেছেন ওসমান। এমন অবস্থায় তিনি সন্তান আর স্বামীর সংসার রায় চাইতে পারছেন না বিচারও। আবার বার বার ফোনে ওসমান এ বিষয়ে কাউকে কিছু না বলার জন্য হুমকি দিচ্ছেন। তবে যাদের হাতে ধরা পড়েছেন ওই রাতে তারা এলাকায় প্রচার করে দেয়ায় তিনি পড়েছেন বিপাকে। ( ভিডিও সহ সংরক্ষিত আছে বক্তব্য টি)

রাতে নারীসহ উপজেলার আবাসিক ভবনে ওসমান কে দেখে ফেলেন ওই এলাকার বাসিন্দা মোঃ হাসমত। তিনি জানান,রাতে তিনি তার কর্মস্থল দিগরাজ থেকে বাসায় ফেরার সময় উপজেলার পরিত্যক্ত আবাসিক ভবনে কথার আওয়াজ শুনতে পান। এসময় তিনিসহ আরো দুই ব্যক্তি উকি দিয়ে দেখেন উপজেলার অফিস সহায়ক ওসমান এক নারী নিয়ে অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত। এ সময় তাকে ডাক দেয়া হলে তিনি দৌঁড়ে পালিয়ে যান। ওই নারী আমাদের কাছে সহায়তা চান। আমরা তার কথা শুনে তাকে তার বাড়ী কুমারখালীর একটি ভ্যানে তুলে দেই। বিষয়টি তিনি এসিল্যান্ড অফিসে কয়েক জন কে জানিয়েছেন বলে দাবি করেন। ওই সময় উপজেলার নাইটগার্ড রবিন এসে সব কথা শুনে আমাদের চলে যেতে বললে আমরা চলে যাই। (বক্তব্যটি ভিডিওসহ সংরক্ষিত আছে)।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে উপজেলার কর্মরত এক ব্যক্তি জানান, এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর পিয়ন ওসমানের সঙ্গে হাতাহাতি হয় এসিল্যান্ড অফিসের তার অন্য সহকর্মীর সাথে। এক পর্যায়ে কিছু না পেরে সাথে দাঁ নিয়ে অফিসে আসেন ওসমান এর পর অফিস সহকারীকে আক্রমনের চেষ্টা করেন। পরে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দাঁটি উদ্ধার করে ওসমানকে ছুটি দিয়ে বাড়ী যেতে বলেন। ( অডিও বক্তব্যটি সংরক্ষিত আছে)।

এ বিষয়ে মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহাত মান্নান বলেন, তিনি বিষয়টি জানেন না। তবে একটি দাঁ তিনি তার কাছে নিয়েছেন। তিনি দাবী করেন দাঁ ঘাস কাটার জন্য অফিসে ছিলো। এখন কোন কাজ নাই তাই তার কাছে নিয়েছেন। ( ভিডিওসহ সংরক্ষিত আছে)।

এদিকে পিয়ন ওসমানের বিরুদ্ধে রয়েছে মানুষদের হয়রানি করার নানা অভিযোগ।মোংলার বিদ্যারবহন এলাকার বাসিন্দা সঞ্জিব জানান, তাদের দুটি ভূমি রেকর্ড নিয়ে জটিলতায় ওসমান উর্ধতন কর্মকর্তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা গ্রহন করেন। একটি ভূমি রেকর্ড করিয়ে দিলেও অপরটি নিয়ে কয়েক মাস গুরাচ্ছেন। বিদ্যারবাহন মৌজায় তাদের এক একর বিশ শতক ভূমি এখন সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর দপ্তরে পঞ্চাশ ধারায় শুনানির অপেক্ষায় আছে। কেন অফিসের পিয়ন কে টাকা দিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে সঞ্জিব বলেন, টাকা না দিলে তিনি তাদের প্রতি পরে নিকট থেকে টাকা নিয়ে তাদের কে শুনানি মামলায় হারিয়ে দিবেন এমন হুমকির কারনে তারা টাকা দিয়েছেন। (অডিওটি সংরক্ষিত আছে)

অন্য দিকে হাসমত আরো অভিযোগ করেন, পিয়ন ওসমান এসিল্যান্ডসহ উর্ধতন কর্মকর্তাদের দোহাই দিয়ে প্রায় মানুষদের জিম্মি করে টাকা নিয়ে থাকেন। তিনি আরো বলেন, ওসমানের বাড়ী বাগেরহাট হওয়ার কারনে তিনি প্রায় জেলা প্রশাসকের সাথে তার ভালো সম্পর্ক আছে এমন দোহাই দিয়ে নিজেকে বড় কিছু জাহির করেন। (ভিডিও সহ সংরক্ষিত আছে)।
তবে নানা অপকর্মের হোতা মোঃ ওসমান নারী ধর্ষনের ঘটনার পর থেকে অফিসে আসেন নাই। তার কর্মস্থল সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর অফিসে বার বার গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি প্রতিবেদক কে বলেন,অপনাদের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক আছে ভবিষ্যতে থাকবে। আমি অনেক দূরে আছি এক দিন পর মোংলায় এসে আমার বক্তব্য দেব। কিন্ত এর পর তিনি আর ফোন রিসিভ করেন নাই। তবে তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচার না করার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে ফোন করা হয়।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।