সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি
নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে : প্রধানমন্ত্রী
নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বাজেটে একশ’ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যেখানে নদী ভাঙন হবে, সেখানেই ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে। নদীগুলোতে পানির প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে আমরা সেগুলো ড্রেজিং করছি। তাছাড়া ভাঙন রোধে নদীশাসন ও বাঁধ দেওয়ার কাজ চলছে। গতকাল রোববার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসের উদ্বোধীন অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী ৬৪ জেলায় ১১ হাজার ৬০৪টি দুর্যোগ সহনীয় বাড়ি ও ১৪ জেলায় ১০০টি আশ্রয়কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের কর্তব্য মানুষের পাশে দাঁড়ানো। দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে জাতির পিতা উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তিনি সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করেছিলেন। তৎকালীন রেডক্রসকে সঙ্গে নিয়ে সাইক্লোনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। সে সময় ৪৫ হাজার ভলান্টিয়ারকে ট্রেনিং দেওয়া হয়েছিল। পরে তারা দুর্যোগ মোকাবিলায় বিভিন্ন এলাকায় কাজ করেন।’ তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের প্রশিতি ভলান্টিয়ার রয়েছে। স্কাউট, বিএনসিসি, গার্ল গাইডসও দুর্যোগ মোকাবিলায় কাজ করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯১ সালে যখন ঘূর্ণিঝড় হয়, তখন আমি সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা। ওই সময় এক অধিবেশনে সরকারদলীয় নেতা বলেছিলেন, ঘূর্ণিঝড়ে যত মানুষ মরার কথা ছিল, তত মানুষ মরে নাই। তখন আমি বলেছিলাম, কত মানুষ মরার কথা ছিল, আর কত মানুষ মরেছে ? যেকোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় সরকার সজাগ না থাকলে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে।
সরকার প্রধান বলেন, ‘আমরা যখনই সরকারে এসেছি, দুর্যোগ মোকাবিলায় ব্যবস্থা নিয়েছি। দুর্যোগের সময় প্রতিবন্ধীদের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে বিষয়ে আমরা সজাগ রয়েছি। শেখ হাসিনা বলেন, দেশে খরা, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস ও ভূমিকম্পের মতো বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষয়-ক্ষতি কমাতে যা যা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার আমরা তা করছি। ইতোমধ্যে আমাদের এসব পদক্ষেপ আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। অনেকেই বাংলাদেশের কাছ থেকে দুর্যোগ মোকাবিলার বিষয়ে জানতে চায়। তারা মনে করে আমাদের কাছ থেকে শেখার আছে। তাই বাংলাদেশ এখন দুর্যোগ মোকাবেলার ক্ষেত্রেও রোল মডেল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নেপালে ভূমিকম্পের সময় আমরা তাদের সৈয়দপুর এয়ারপোর্টটি ব্যবহার করতে দিই। প্রতিবেশী দেশগুলো দুর্যোগের সময় এই বিমানবন্দরটি ব্যবহার করতে পারবে। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে একে অপরকে সহযোগিতা করা আমাদের দায়িত্ব। বৃক্ষরোপণের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ আশির দশকে কৃষক লীগের মাধ্যমে সারাদেশে পহেলা আষাঢ় থেকে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ নেয়। প্রত্যেকে যেন একটি করে গাছ লাগান সে ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়। বনভূমি বৃদ্ধিতে উপকূলীয় এলাকায় সবুজ বেষ্টনী তৈরি করা আমাদের লক্ষ্য। চট্টগ্রামের ঝাউবন তৈরির ফলে বিশাল এলাকা জলোচ্ছ্বাসের কবল থেকে রক্ষা পায়। এছাড়া বনভূমি সৃষ্টিতে হেলিকপ্টারে করে আমরা পাহাড় অঞ্চলে বীজ ছিটিয়ে দিয়েছিলাম। তিনি বলেন, সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। যেকোনও মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ সব সময় প্রস্তুত রয়েছে।