জি কে শামীমের সাত দেহরক্ষীর জামিন নাকচ
টেন্ডার, চাঁদাবাজি, অস্ত্রবাজি এবং অর্থ পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া যুবলীগ নেতা জি কে শামীমের সাত দেহরক্ষীর জামিন আবেদন নাকচ করেছেন আদালত।
রোববার শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম আসামিদের জামিন নাকচের এ আদেশ দেন।
জামিন নাকচ হওয়া সাত দেহরক্ষীরা হলেন- মো. দোলোয়ার হোসেন, মো. মুরাদ হোসেন, মো. জাহিদুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, কামাল হোসেন, সামসাদ হোসেন ও আমিনুল ইসলাম।
এদিন আবদুর রহমান হাওলাদারসহ কয়েকজন আইনজীবী আসামিপক্ষে জামিন শুনানি করেন। শুনানিতে তারা বলেন, আসামিদের কাছ থেকে পাওয়া অস্ত্র তাদের নিজেরই, বৈধ অস্ত্র। এগুলো তাদের নামে লাইসেন্স করা। তারা কোনো বেআইনি কাজ করেননি।
অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে আদালতে সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান আসামিদের জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামিদের জামিন নাকচ করেন।
এর আগে গত ২৬ সেপ্টেম্বর অস্ত্র আইনের মামলায় চারদিনের রিমান্ড শেষে আসামিদের আদালতে উপস্থিত করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। একই সঙ্গে তিনি আসামিদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।
অপরদিকে আসামিপক্ষে জামিন আবেদন করা হয়। আদালত ওই দিন আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন এবং জামিন শুনানির জন্য রোববার ধার্য করেন।
গত ২০ সেপ্টেম্বর গুলশানের নিজ কার্যালয়ে সাত দেহরক্ষীসহ গ্রেফতার হন জি কে শামীম। পরে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও অর্থ পাচার আইনে তিনটি মামলা করা হয়।
মামলার এজাহারে শামীমকে চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, অবৈধ মাদক ও জুয়ার ব্যবসায়ী বলে উল্লেখ করা হয়।
গত ২১ সেপ্টেম্বর শামীমের অস্ত্র ও মাদক মামলায় পাঁচদিন করে মোট ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। একই সঙ্গে তার সাত দেহরক্ষীর অস্ত্র আইনের মামলায় চারদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর হয়।
এদিকে গত ২৭ সেপ্টেম্বর অস্ত্র মামলায় রিমান্ড শেষে জি কে শামীমকে মাদক আইনের মামলায় পাঁচদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। বর্তমানে জি কে শামীম মাদক আইনের মামলায় রিমান্ডে আছেন। আগে মামলাটির তদন্তে ছিল ডিবি পুলিশ। বর্তমানে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) তদন্ত শুরু করেছে। র্যাব-১ এর এসআই আবদুল হালিম মাদক আইনের এ মামলাটি তদন্ত করছেন।
অস্ত্র মামলা ও মাদক মামলার এজাহারে বলা হয়, শামীমের দেহ তল্লাশি করে তার নামীয় একটি এনপিবি দশমিক ৩২ বোরের পিস্তল, ৪৭ রাউন্ড গুলি ও তিনটি গুলির খোসা পাওয়া যায়। তার সাত বডিগার্ডের (দেহরক্ষী) প্রত্যেকের কাছ থেকে কালো রংয়ের দশমিক ১২ বোরের একটি শটগান পাওয়া যায়।
আর দেহরক্ষী মো. দোলোয়ার হোসেনের কাছ থেকে সাতটি কার্তুজ, মো. মুরাদ হোসেনের কাছ থেকে ১০টি কার্তুজ, মো. জাহিদুল ইসলামের কাছ থেকে তিনটি কার্তুজ, শহিদুল ইসলামের কাছ থেকে ১০টি কার্তুজ, কামাল হোসেনের কাছ থেকে ১০টি কার্তুজ, সামসাদ হোসেনের কাছ থেকে ২৩টি কার্তুজ ও আমিনুল ইসলামের কাছ থেকে ১০টি কার্তুজ পাওয়া যায়।
এ ছাড়াও তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন উদ্ধার করে জব্দ করা হয়। এ ছাড়া শামীমের বাড়ির তৃতীয় তলার অফিসকক্ষের ফ্রিজের ভেতর তার দখল ও হেফাজতে থাকা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পাঁচ বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়। যার মূল্য আনুমানিক ৩৭ হাজার ২৫০ টাকা।